চট্টগ্রামের আনোয়ারার কর্ণফুলী টানেল প্রবেশ মুখে চাতরী চৌমুহনী বাজার এলাকার সড়কের দু’পশে গড়ে উঠছে অবৈধ দোকনপাট ও গাড়ির স্টেশন। দেখে বুঝার কোনো উপায় নেই, এটি সড়ক নাকি কোনো গাড়ির স্টেশন। বিকেল গড়াতেই গাড়ির সংখ্যা বাড়তে যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হয় দক্ষিণ চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলার যাত্রীদের।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার প্রাণকেন্দ্র চাতরী চৌমুহনী বাজারে কোরিয়ান কেইপিজেড, কাফকো, সিইউএফএল সার কারখানা, টানেল সার্ভিস এরিয়া, পারকি পর্যটন কর্পোরেশনের শ্রমিকসহ কর্ণফুলী টানেল, কর্ণফুলী, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, কক্সাবাজারসহ ঢাকাগামী যাত্রীদের চলাচল। গুরুত্বপূর্ণ বাজারটিতে চাতরী স্কুল রোড, সিইউএফএল সড়কসহ সড়কের দু’পশে গড়ে উঠছে অবৈধ দোকনপাট ও গাড়ির স্টেশন। দেখে বুঝার কোনো উপায় নেই, এটি সড়ক নাকি কোনো গাড়ির স্টেশন। এসব দোকানপাট ও গাড়ির স্টেশনকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে একটি চাঁদাবাজির সিন্ডিকেটও।
যার ফলে টালেনের আনোয়ারার প্রান্ত চাতরী চৌমুহনী বাজারে আসলে পোহাতে হয় যানজটের ভোগান্তি। এছাড়াও বেপোরোয়া ভাবে এ সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কর্ণফুলী ড্রাইডকের স্ক্র্যাস্পবাহী ঝুঁকিপূর্ণ খোলা ট্রাক। উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করলেও প্রভাবশালীদের প্রভাবে ফের গড়ে উঠে সড়কে দোকানপাট ও অবৈধ গাড়ির স্টেশন। ট্রাফিক পুলিশের জনবল সংকটের সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালীরা চাঁদা আদায় ও অনিয়মের কারণে ভেঙ্গে পড়েছে উপজেলার ট্রাফিক ব্যবস্থাও।
স্থানীয় ব্যবসায়ী, চালকরা জানান, সড়ক দখল করে দোকানপাট ও স্টেশনকে ঘিরে চলে নিরবে চাঁদাবাজি। সড়কে প্রতিটি দোকান থেকে একটি প্রভাবশালী মহল সন্ধ্যারপর থেকে টাকা তুলেন। আর লাইনম্যানের নামে ব্যক্তিরা বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সিএনজি অটোরিকশাসহ অন্য যানবাহনের দায়িত্ব পালনের নামে করছে চাঁদাবাজিও। তাদের যন্ত্রণায় ব্যবসায়ীরাও অতিষ্ঠ।
পেকুয়া থেকে আসা সিএনজি চালক হাফিজুর রহমান বলেন, এখানে গাড়ি দাঁড়াতে লাঠি হাতে এক ব্যক্তিকে ৫০ টাকা দিতে হয়। না দিলে কোনো যাত্রী উঠতে এবং দাঁড়াতে দেয় না। তারা স্থানীয় প্রভাবশালীর লাইনম্যানের দায়িত্বে রয়েছে বলে আমাদের পরিচয় দেয়। টাকা দিতে না চাইলে অনেক সময় মারধরও করে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা চাতরী চৌমুহনী বাজার ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘তাদের জনবল সংকট রয়েছে, মাত্র দুইজন পুলিশ সদস্য কাজ করছেন সড়কে। অনেক সময়ে এখান থেকে অন্য স্থানেও দায়িত্ব পালনের জন্য যেতে হয় তাদের।’ তিনি বলেন, ‘লাইনম্যানের নামে যারা সিএনজি অটোরিকশা বা ব্যাটারী চালিত রিকশায় দায়িত্ব পালন করছে তাদেরকে আমি চিনিও না, বিষয়টি আমি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এখানে কোন প্রকার চাঁদাবাজি চলতে পারবে না।’
ইতিমধ্যে যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা থেকে মুক্তির জন্য কর্ণফুলী টানেল সড়কের চাতরী চৌমুহনী বাজার মোড়ে ডিভাইডার স্থাপন করেছে উপজেলা প্রশাসন। ডিভাইডার স্থাপনের সড়কে যানজট অনেক কমবে ও সুফলও পাবে বলে আশাবাদী এ এলাকার মানুষের।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার বলেন,‘পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে মানুষের দুর্ভোগ লাগবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’