চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর পুলিশ ফাঁড়িতে বৈঠকে কথা-কাটাকাটির জেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রপ্রতিনিধি ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাত দশটার দিকে কর্ণফুলী থানায় এ ঘটনাটি ঘটে।
থানা পুলিশ, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে ডাঙারচর নৌ-পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ছাত্রপ্রতিনিধি সেলিম রেজা ও বিএনপি নেতা মোহাম্মদ সালা উদ্দিন একটি বৈঠকে বসেন। বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন স্থানীয় ছাত্রদল–যুবদলের কয়েকজন নেতা–কর্মীকে সঙ্গে নেন। বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই আব্দুল হালিমের উপস্থিতিতে দু’পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতহাতির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর ছাত্রপ্রতিনিধি সেলিম রেজাকে আওয়ামী লীগের দোসর উল্লেখ করে কর্ণফুলী থানায় নিয়ে যান সালাউদ্দিনের কর্মীরা। পরে খবর পেয়ে রাতে ছাত্র প্রতিনিধি ও বিএনপির নেতা–কর্মীরা থানায় গেলে উত্তেজনা দেখা দেয়।
সেলিম রেজা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলো বলে অভিযোগ উঠে। তিনি বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা এবং আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু স্মৃতি সংসদে সংশ্লিষ্ট থাকার প্রমাণও মিলে। তবে বর্তমানে নিজেকে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দেন।
পরে থানা পুলিশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা থানা এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল বের করে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয় দেওয়া সেলিম রেজা একজন আওয়ামী লীগের দোসর এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানির জন্য এসব ঘটনার জন্ম দিয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রপ্রতিনিধি মিজানুর রহমান খোকা জানান, কিছুদিন আগে বিএনপির নেতার টেন্ডারবাজি নিয়ে আমাদের একজন ছাত্রপ্রতিনিধি প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদ করায় সে বিএনপি নেতা তাকে হুমকি দেওয়ায় থানায় একটি অভিযোগ করেন ছাত্রপ্রতিনিধি। সে ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ডাঙারচর নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে একটি বৈঠকে গিয়েছিলাম আমরা তিনজন। বৈঠকের পূর্বেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অকথা ভাষায় গালিগালাজসহ পুলিশের সামনে আমাদের উপর হামলা করে ২০ থেকে ২৫ জনকে নিয়ে।
তিনি আরও জানান, হামলার এক পর্যায়ে পুলিশ ফাড়ির ভিতরে আমাদের একটা গেইটে ঢুকিয়ে পুলিশ বাহির থেকে তালা মেরে আশ্রয় নেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাদের আক্রমণে পায়ে আঘাতও পায়। ঘন্টাখানেক পরে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের উদ্বার করে। বিএনপির এ নেতা থানায় এসে আমাদের আওয়ামী লীগ বলে গালমন্দ করে আবারও আক্রমণ করে। এতে আমরা দুইজন গুরুতর আহত এবং অপরজনের অবস্থা খুবই খারাপ। বর্তমানে হাসপাতালে।
ডাঙারচর নৌ-পুলিশের এএসআই আব্দুল হালিম বলেন, বৈঠকের সময় হঠাৎ সেলিম রেজাকে মারধর করে। আমরা চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারিনি। অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা এটি।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, তেমন কিছুই না। তুচ্ছ ঘটনা এটা। থানা বা পুলিশের কোনো ক্ষতি হয়নি। এঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগও করেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।