বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আহমেদ আজম খান বলছেন, ‘আগামী ৫ আগস্ট এক বছর পূর্ণ হবে, ৫ অক্টোবর নির্বাচনী রোড়ম্যাপ ঘোষনা করুন। ৫ ডিসেম্বর নির্বাচন হবে, যারা সরকারে যাবে তারা দেশ সংস্কার করবে, নইলে দেখেননি! কিভাবে জনগণ ফ্যাসিস্ট সরকারকে পালাতে বাধ্য করেছে। ষড়যন্ত্রকারীরা তা মনে রাখুন, আর কোন তালবাহানা নয়। নির্বাচন দিন, দেশ সংস্কার নির্বাচিত সরকার করবে।’
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়ার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব লায়ন মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ (ভিপি হারুন) ও ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
এডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, ৫ আগস্ট তৈরি করেছি, তার পেছনে কাজ করেছে তারেক রহমান। আমরা মনে করেছিলাম নির্বাচন হবে, বাংলাদেশের জনগণ যখন নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে ঠিক সেই মুহুর্তে শুরু হয়েছে ষড়যন্ত্র। ষড়যন্ত্রকারীরা বলছে, আগে সংস্কার পরে নির্বাচন, আমরা বলি সংস্কারের জন্য এক বছর সময়, সংস্কার তো নির্বাচিত সরকার করবে, যারা সরকারে আসবে তারা সংস্কার করবে। ৫ আগস্ট আমরা যে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারকে বিদায় করেছি, ড. ইউনসকে সম্মান করি, সম্মানের সাথে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্বাচন দিন। ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের পথে নামতে বাধ্য করেছে।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী নির্বাচন হবে অত্যন্ত কঠিন। এ নির্বাচন রাতে হবেনা, কারচুপি হবেনা, নির্বাচনে জনগণ ভোট দেবে, এ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসন তারেক রহমানকে উপহার দিতে হবে। কাল থেকেই নির্বাচনের প্রস্ততি নিন, ঘরে-ঘরে মানুষের কাছে গিয়ে ভোট ভিক্ষা করুন।
আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্ত্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. জিল্লুর করিম, পটিয়ার সাবেক সংসদ গাজী শাহজাহান জুয়েল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আলী আব্বাস, মিশকাতুল ইসলাম পাপ্পা, কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এস.এম মামুন মিয়া, আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাস্টার মুহাম্মদ রফিক, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সরোয়ার হোসেন, মো. জাগির আহমেদ, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রবিউল আলম রবি, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সবুজ, ইসমাইল বিন মনির, শহীদুল ইসলাম সায়েমসহ জেলা-উপজেলার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
প্রায় দেড় যুগ ধরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলায় অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো স্থবির ছিল বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আবারো ‘পুনরুজ্জীবিত’ হয় দলটি। এরই মধ্যে পটিয়ার ইদ্রিস মিয়াকে আহ্বায়ক এবং আনোয়ারার লায়ন মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে দলটির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার কমিটি অনুমোদনের পর থেকে চাঙ্গা হয় দলটির দক্ষিণ চট্টগ্রামের কার্যক্রম। জনসভাকে ঘিরে গত সপ্তাহ ধরে আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের ব্যানার-পোষ্টারে ছেঁয়ে যায়। শনিবার দুপুর থেকে উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজার-কালাবিবি দীঘির মোড়, আনোয়ারা সদরে ছিলো দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার নেতাকমীদের মিছিল। জনসভায়ও নারী-পুরুষসহ কয়েক লক্ষাধিক নেতাকর্মীদের ঢল নামে।