দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে স্বল্প মেয়াদি বিদেশি ঋণের স্থিতি আরও কমেছে।
এক বছরের ব্যবধানে মে শেষে স্বল্প মেয়াদে নেওয়া বিদেশি ঋণের স্থিতি কমেছে ৮২ কোটি ডলার বা ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, চলতি বছর মে শেষে স্বল্প মেয়াদের বিদেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের মে মাসে যা ছিল ১১ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার।
স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ বলতে বোঝায় বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া এমন অর্থায়ন যার মেয়াদ এক বছরের কম।
এটি সাধারণত আমদানি পণ্যের অর্থ পরিশোধ, সেবা ক্রয় বা অন্যান্য স্বল্পমেয়াদি আর্থিক চাহিদা পূরণের মত ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছর মে মাসে বেসরিকারি খাতের উদ্যোক্তারা স্বল্প মেয়াদি বিদেশি ঋণ নিয়েছেন ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। এ সময় সুদ-আসল পরিশোধ করা হয়েছে ১ দশমিক ৯৮বিলিয়ন ডলার।
অর্থাৎ মে মাসে স্বল্প মেয়াদি বিদেশি ঋণ যা এসেছে তার চেয়ে সুদ-আসল পরিশোধ হয়েছে বেশি।
আগের মাস এপ্রিলে ঋণ এসেছিল ১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার এবং পরিশোধ করা হয় মোট ১ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার। এপ্রিল শেষে স্থিতি দাঁড়ায় ১০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।
এ বিষয়ে সেন্টার ফর ইস্ট এশিয়ান ফাউন্ডেশনের রিসার্চ বিভাগের পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ মাজেদুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফের ডটকমকে বলেন, যেহেতু অনেক দিন ধরে দেশে নির্বাচিত সরকার নেই, তাই ঋণ আসছে কম। নির্বাচিত সরকার এলে সেটা বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, “তাছাড়া আগের বছরগুলোতে বিভিন্ন বিদেশি রেটিং এজেন্সি বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়েছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ডলার দরের স্থিতিশীলতাও বিবেচনা করেন বিনিয়োগকারীরা। তাই দুই ধরণের সমস্যা রয়েছে।”
চলতি বছর জানুয়ারিতে চার বছর পর ১০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যায় স্বল্প মেয়াদি বিদেশি ঋণের স্থিতি। ওই মাস শেষে তা দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে কোভিড মহামারীর মধ্যে তা ৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল।
গত বছরের জানুয়ারিতে স্থিতির পরিমাণ ছিল ১১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে এসে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন এবং ১০ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। গত বছর এই দুই মাসে যা ছিল যথাক্রমে ১১ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ও ১১ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছর প্রথম চার মাসে স্বল্প মেয়াদি বিদেশি ঋণ যা এসেছে, এর চেয়ে বেশি পরিশোধ করা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে এপ্রিলে বিদেশি ঋণ এসেছে ৬ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। এসময়ে পরিশোধ করা হয় ৭ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলার। মে মাসেও এই ধারায় রয়েছে বিদেশি ঋণের স্থিতি।