চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে বিএনপি নেতার মায়ের জানাজায় শোক ব্যানার ছিঁড়ানোকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ডাকপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের এঘটনা ঘটে।
দু’গ্রুপের মারামারির ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন দৈনিক আজাদী পত্রিকার মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি মো. মহিউদ্দিন। এসময় স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে প্রাণ রক্ষা পান তিনি। মহিউদ্দিন একই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা এবং কর্ণফুলী প্রেসক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক।
তার ওপর হামলায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন কর্ণফুলী প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মোরশেদুর রহমান নয়নসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। এসময় তারা হামলার জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও গ্রেপ্তারের দাবী জানান।
সংঘর্ষে কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম মামুন মিয়ার সমর্থিত বড়উঠান ইউনিয়ন যুবদল নেতা মীর্জা আতাউল্লাহ, ছাত্রদল নেতা মো. রাকিব, মো. আরফাত, যুবদল নেতা আহমদ নুর, আবদুল হালিম, আবদুল আজিজ, লোকমানসহ আরও কয়েক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দু’গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এসময় বড়উঠান ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এড. নাজিম উদ্দিনের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এহসান-এ খানের মায়ের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, সাবেক সাংসদ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য সরওয়ার জামান নিজাম, কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম মামুন মিয়া, সদস্য সচিব হাজী মুহাম্মদ ওসমানসহ জেলা উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। জানাজা নামাজের আগে সাবেক সাংসদ সরওয়ার জামান নিজামের একটি শোক ব্যানার টাঙিয়ে দেন তার সমর্থিত নেতাকর্মীরা। কিছুক্ষণ পরে ব্যানারটি ছিঁড়ে ফেলে। ব্যানার ছিঁড়ানোকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। জানাজার নামাজ শেষে দু’গ্রুপ জড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষে। এসময় তাদের মারামারির ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে হামলার শিকার হন দৈনিক আজাদী পত্রিকার মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি মো. মহিউদ্দিন।
দু’গ্রুপের সংঘর্ষে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং পিএবি কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়ক আধা ঘন্টা গাড়ি চলাচলও বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে কর্ণফুলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।
হামলার শিকার সাংবাদিক মহিউদ্দিন বলেন, ‘সংর্ঘষ চলাকালীন আমি ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে তারা আমার ওপর হামলা করে। এসময় তাদের আমি সাংবাদিক পরিচয় দিয়েও রক্ষা পাইনি। গাছের টুকরো দিয়ে মারধর করে কেড়ে নেয় মোবাইল ফোনও। আমার এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে প্রাণে রক্ষা পাই।’
ঘটনারপর তাৎক্ষণিক সাংবাদিক মহিউদ্দিনকে দেখতে যান কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী মুহাম্মদ ওসমান। এসময় তিনি বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলা খু্বই দুঃখজনক। যদি আমার দলের কেউ জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। হামলার শিকার সাংবাদিকের বাড়িতেও গিয়েছি আমরা। এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।